Life Hacksটিউটোরিয়ালভালোবাসা

ভূতের সাথে দেখা। শেষ পর্ব | বাংলা ভুতের গল্প

 ভূতের সাথে দেখা। বাংলা ভুতের গল্প

 

Bangla Horror Story

 

শেষ পর্ব _

  

ঠাৎ  সবার ঘুম ভেঙ্গে গেল দলের বেহালা বাদকের চিল চিৎকারে। সবাই দেখলো যে সে ঘরের খুটিটাকে 

জাপটে ধরে বলির পাঠার মতো ঠকঠক করে কাপছে আর তারস্বরে চিৎকার করছে। তাকে কি জিজ্ঞাসা করতে গিয়ে অনেকেরই দৃষ্টি জানলার বাইরে চলে  গেলে আর তারপরই অনেক গুলো কন্ঠ থেকে বেহালা বাদকের মতোই আর্তচিৎকার বেরিয়ে এল। এ তারা কোথায় এসে পড়েছে.? 

কালকের মাঠ, সামিয়ানা সব ভ্যানিশ- পরিবর্তে বিস্তীর্ণ 

এলাকা জুরে এখানে ওখানে পোড়া চিতা, সাজানো চিতা,মরা খুলি,হাড় আর পরিত্যক্ত মালসা পড়ে আছে। 

সবে ভোরের আলো ফুটেছে- আকাশের রঙে এখনো একটা কালচে ভাব আছে। দূরে একটা চিতায় সদ্য আগুন লাগানো হয়েছে। চিতার চারপাশে দাঁড়িয়ে মৃতের আত্নীয় স্বজন বিলাপ করছে। মামা এবং তার দলবল শীঘ্রই উপলব্ধি করলো যে গতরাতে তারা একটা ভূতের দলকে পালা দেখিয়েছে। আর এটা বোঝা মাত্রই বাক্স প্যাটরা নিয়ে যে যেদিকে পাড়লো দৌড়  দিলো।

মামাও দৌড়াতে দৌড়াতে গ্রামের একদিকের সীমানায় পৌঁছে গেলো, যেখান দিয়ে সেই সময় কয়েকজন কৃষক মাঠে চাষ করতে যাচ্ছিল। মামাকে ওই মূর্তিতে দেখে এবং সব জিজ্ঞাসা করে তারাও যেন ঘাবড়ে গেল। কেবল তাদের মধ্যে মাতব্বর গোছের একজন চাষা বলল, “বুঝেছি”। তেনাদের গান বাজনা শোনার শখ হয়েছিলো। তাই তোমাদের ওনারা ভাড়া করেছিল”। এরপর তারা মামাকে কাছেই একটি মন্দিরে নিয়ে গেলো। সেখানে প্রতিষ্ঠিত একটি মূর্তি দেখিয়ে একজন বলল ” দেখো ওদের সর্দারকে কি এইরকম দেখতেছিল  কি না.?” মামা সভয়ে দেখল যে লোকটা  পালা বায়না করতে এসেছিল এবং তাকে টাকার মালা উপহার দিয়েছিল, তারই মূর্তি মন্দিরে শোভা পাচ্ছে। বিমূঢ়তায় মামা শুধু ঘাড় নাড়িয়ে সায় দিতে পাড়লো। মাতব্বর বললো “তোমাদের পরম সৌভাগ্য যে তোমাদের পালা স্বয়ং ভূতেশ্বরানন্দ মহারাজ পছন্দ করেছেন। ভয় পেয়ো না খুশী মনে বাড়িতে যাও। তোমাদের ভালোই হবে।” 

বাড়ী ফেরার পর মামার ধূম জ্বর হয়েছিল এবং মামা বেশ কয়েক সপ্তাহ ভুগেছিল। ভালো হয়েই মামা যাত্রাদলটাকে ভেঙে দিল। এর কিছুদিন পরই মামা ফাটকায় বেশ কিছু টাকা পেল, যা দিয়ে মামা একটা ব্যবসা শুরু করলো। ব্যবসাটা তারাতাড়ি দাঁড়িয়ে যায় আর মামা শীঘ্রই ধনী হয়ে ওঠেন। 

দিদিমার গল্প এখানেই শেষ। কিন্তু আজও যখন যুক্তি দিয়ে ভাবতে বসি, তখন একটা জিনিস কিছুতেই বুঝতে পারিনা,সেটা হচ্ছে- নিরক্ষর দিদিমা ও দাদু হ্যালোসিনেশন বা দৃষ্টিবিভ্রমের কারনে স্কন্ধকাটা বা শাকচুন্নী দেখতে পারে, দিদিমা তার মৃতা জা কে দেখতে পারে; কিন্তু মামার সঙ্গে ভূতের সর্দারের মোলাকাত মোটেই “গুপী গাইন বাঘা বাইন” থেকে টুকে দেওয়া কোন কাহিনী নয়। কারন দিদিমা যে সময়ের পটভূমিকায় মামার গল্পটা বলেছিল, তার দশ বছর বাদে ঐ কালজয়ী সিনেমাটি নির্মিত হয়েছিল।

–সমাপ্ত–

 _শীতল আচার্য 

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button